ঢাকা ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে বাঙ্করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে মাটি চাপায় ১ জনের মৃত্যু কোম্পানীগঞ্জে ভোলাগঞ্জ ক্ষুদ্র পাথর ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সভা কোটালীপাড়ায় মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশে দিলেন মা বিজয়ের কণ্ঠ’র মাল্টিমিডিয়ায় বর্ষসেরা পুরস্কার পেলেন নাহিম “নারীর অধিকার, ক্ষমতায়ন, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক বোয়ালমারীতে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করায় দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা এক লক্ষ টাকা আলফাডাঙ্গার বানা ইউনিয়নে আগুনে আটটি দোকান পুড়ে ছাই ছনবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল বোয়ালমারীতে থ্রি হুইলার উল্টে চালকের মৃত্যু কোম্পানীগঞ্জে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন রোধে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 

টুটুল বসু, বোয়ালমারী,ফরিদপুর
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪ ১২৭ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক কালের খেয়া অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছে।

তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষের নাম মো. ফরিদ আহমেদ।

২৯ আগস্ট বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে গভর্নিং বডির সদস্য শহীদউদ্দিন মিয়া দিপুর নিকট দুই কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষ ও তার দুর্নীতির দোসর শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফের পদত্যাগের সময় বেঁধে দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও জানান তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন- অধ্যক্ষ মো ফরিদ আহমেদ স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কলেজটির শিক্ষার পরিবেশ চরম ভাবে অবনতি ঘটেছে। তিনি শিক্ষকদের মধ্যে  বিভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন।

কলেজটির পরিচালনা পর্ষদ, অধ্যক্ষ ও শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে আনীত ১৪ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখে।এতে অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদের ব্যাপক অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পরে। এতে গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই বিধি বহির্ভূতভাবে নানা প্রকল্প নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ প্রমাণিত হয়।

তদন্ত কমিটি গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দেন। এতে কলেজটির  প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সভাপতি, ফরিদপুর -১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম বরাবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হলেও তা অদ্যবধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করে। এ ছাড়া শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে  হোস্টেল পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও অধ্যক্ষের দুর্নীতির আপাদমস্তক সহায়তাকারী ও বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা।

শরীরচর্চা শিক্ষক আ. রউফ খান এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি দুর্নীতিতে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যান। জানা যায় এক সময় এ কলেজে দুর দুরান্তের শতাধিক শিক্ষার্থী কলেজ হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা করলেও শরীরচর্চা শিক্ষক হোস্টেলের দায়িত্ব নেওয়ার পর খাবারের মান নিম্নমানের দেওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও দুর্ব্যবহারে বর্তমানে হোস্টেলে মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী থেকে নিজেরাই মেস করে থাকেন।

অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদ বলেন- এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। আয়-ব্যয় সব ব্যাংকের মাধ্যমে হয়। এবং প্রতিটি প্রকল্প কমিটি সম্পাদন করে থাকে। আমি গভর্নিং বডির নিকট লিখিত জবাব দিয়েছি। আমি কোনো প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত নই।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আব্দুর রশিদ জানান- ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আনীত অভিযোগ তদন্ত করে আমরা ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাই। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আমাদের ১ টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। তিনি সেটা জমাও দিয়েছেন। পরবর্তী গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিলো। দীর্ঘদিন সভাপতির ব্যস্ততায় মিটিং হয়নি। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর সাথেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। অচিরেই সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কলেজটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন- শিক্ষার্থীরা আমার নিকট এসেছিল। কলেজটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের একটি লিখিত জবাব তিনি জমা দিয়েছেন, অচিরেই পরবর্তী সভা ডেকে এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হবে, দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের এসময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ 

আপডেট সময় : ০৯:৪২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৪

 

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছে।

তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষের নাম মো. ফরিদ আহমেদ।

২৯ আগস্ট বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে এ বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে গভর্নিং বডির সদস্য শহীদউদ্দিন মিয়া দিপুর নিকট দুই কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষ ও তার দুর্নীতির দোসর শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফের পদত্যাগের সময় বেঁধে দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও জানান তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন- অধ্যক্ষ মো ফরিদ আহমেদ স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কলেজটির শিক্ষার পরিবেশ চরম ভাবে অবনতি ঘটেছে। তিনি শিক্ষকদের মধ্যে  বিভেদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন।

কলেজটির পরিচালনা পর্ষদ, অধ্যক্ষ ও শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে আনীত ১৪ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখে।এতে অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদের ব্যাপক অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পরে। এতে গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই বিধি বহির্ভূতভাবে নানা প্রকল্প নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ প্রমাণিত হয়।

তদন্ত কমিটি গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দেন। এতে কলেজটির  প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সভাপতি, ফরিদপুর -১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী সিরাজুল ইসলাম বরাবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হলেও তা অদ্যবধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করে। এ ছাড়া শরীরচর্চা শিক্ষক আব্দুর রউফ খানের বিরুদ্ধে  হোস্টেল পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও অধ্যক্ষের দুর্নীতির আপাদমস্তক সহায়তাকারী ও বিভিন্ন প্রকল্পে ঠিকাদারি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা।

শরীরচর্চা শিক্ষক আ. রউফ খান এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি দুর্নীতিতে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যান। জানা যায় এক সময় এ কলেজে দুর দুরান্তের শতাধিক শিক্ষার্থী কলেজ হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা করলেও শরীরচর্চা শিক্ষক হোস্টেলের দায়িত্ব নেওয়ার পর খাবারের মান নিম্নমানের দেওয়া ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও দুর্ব্যবহারে বর্তমানে হোস্টেলে মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী থেকে নিজেরাই মেস করে থাকেন।

অধ্যক্ষ ফরিদ আহমেদ বলেন- এখানে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নাই। আয়-ব্যয় সব ব্যাংকের মাধ্যমে হয়। এবং প্রতিটি প্রকল্প কমিটি সম্পাদন করে থাকে। আমি গভর্নিং বডির নিকট লিখিত জবাব দিয়েছি। আমি কোনো প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত নই।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আব্দুর রশিদ জানান- ৩য় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আনীত অভিযোগ তদন্ত করে আমরা ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাই। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আমাদের ১ টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। তিনি সেটা জমাও দিয়েছেন। পরবর্তী গভর্নিং বডির মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিলো। দীর্ঘদিন সভাপতির ব্যস্ততায় মিটিং হয়নি। মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাঁর সাথেও এ বিষয়ে কথা হয়েছে। অচিরেই সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কলেজটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন- শিক্ষার্থীরা আমার নিকট এসেছিল। কলেজটির অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের একটি লিখিত জবাব তিনি জমা দিয়েছেন, অচিরেই পরবর্তী সভা ডেকে এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হবে, দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের এসময় পর্যন্ত ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছি।